গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণহানি ছাড়াল ৪৬ হাজার
- By Jamini Roy --
- 10 January, 2025
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ১৫ মাস ধরে চলমান ইসরাইলি হামলা মানবিক বিপর্যয়ের নতুন মাত্রা ছুঁয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি মানুষ।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার তথ্য অনুসারে, ইসরাইলি বাহিনীর নতুন করে চালানো হামলায় বৃহস্পতিবার সকালেই নুসেইরাত ও দেইর আল বালাহসহ বিভিন্ন এলাকায় আরও ২২ জন নিহত হয়েছেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরাসরি নির্দেশে এসব নিরাপদ এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। এর ফলে অসংখ্য ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এই সংঘাতে গাজার বিভিন্ন এলাকা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। নেতানিয়াহুর বাহিনী প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকাকে টার্গেট করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ।
গাজায় এই গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি বিল পাস করেছে।
এই পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এক মার্কিন কংগ্রেসওমেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, "নতুন প্রশাসন যুদ্ধ বন্ধ বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেই বেশি ব্যস্ত।"
গাজার এই সংঘাত নিয়ে নিজ দেশে চাপে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ইসরাইলের শত শত বাসিন্দা রাস্তায় নেমে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং বন্দি মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এমনকি নেতানিয়াহুর নিজ দলের নেতাকর্মীরাও তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
এদিকে হুতি বিদ্রোহীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, গাজায় হামলা বন্ধ না হলে লোহিত সাগরে তাদের হামলা অব্যাহত থাকবে। এর জেরে ইসরাইলের বিভিন্ন জাহাজ এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে।
গাজায় এই যুদ্ধ কেবল ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার প্রতীক। নেতানিয়াহুর বিতর্কিত পদক্ষেপ এবং আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্বজুড়ে এই সংকট সমাধানের জন্য শক্তিশালী উদ্যোগের আহ্বান জানানো হচ্ছে।