ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ: মিসাইল হামলা, দখলদারিত্ব ও ক্রমবর্ধমান হতাহতের সংখ্যা
- By Jamini Roy --
- 05 January, 2025
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের উত্তাপ আরও বেড়েছে, উভয় পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটছে। রাশিয়া শনিবার (৪ জানুয়ারি) ইউক্রেন থেকে ছোড়া আটটি যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি করেছে। এর জবাবে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
শনিবার রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলের নাদিয়া গ্রাম দখলের দাবি করেছে। একই দিনে ইউক্রেনের কিয়েভ, ব্রিয়ান্সক, কুরস্ক, এবং চেরনিহিভ অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রুশ আক্রমণের প্রতিশোধ হিসেবে ইউক্রেন দনবাসে একটি বেসামরিক গাড়িতে ড্রোন হামলা চালায়, যেখানে একজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
রাশিয়ার এ আক্রমণ সামাল দিতে কিয়েভ রীতিমতো সংকটে পড়েছে। আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়া ইতোমধ্যেই দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় ৪,১৬৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে। তবে এই দখলের বিনিময়ে রাশিয়া চার লাখ ত্রিশ হাজার সেনা হারিয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মধ্যে মস্কো সেন্ট পিটার্সবার্গের পুলকোভো বিমানবন্দরের ফ্লাইট ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে। ইউক্রেনের হামলা থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো রক্ষা করতে রুশ আদালত ইয়ানডেক্সকে তেল শোধনাগারের মানচিত্র লুকানোর নির্দেশ দেয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, চীন রাশিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে। মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে রাশিয়া ইউক্রেনের অস্ত্র ঘাটতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও অঞ্চল দখলের পরিকল্পনা করছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের শুরুতেই রাশিয়ার গড়ে প্রতিদিন ১,১৮০ জন সেনা হতাহত হয়েছে। বছরের শেষ দিকে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এছাড়া, রাশিয়ার আক্রমণে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীও চাপে রয়েছে।
যুদ্ধের ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে, যেখানে মানবিক সংকট, ব্যাপক হতাহতের সংখ্যা এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির জটিলতা আরও গভীর হচ্ছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত বর্তমানে ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের রূপ নিয়েছে। উভয় পক্ষের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ আরও তীব্র হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এই সংঘাত থামানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।