পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চাইলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস
- By Jamini Roy --
- 23 January, 2025
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রমে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দিনভর মূল ইভেন্ট এবং সাইডলাইনে বিভিন্ন বৈঠকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি, তরুণদের উন্নয়ন, এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, বাংলাদেশের থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই অর্থ ফেরত এনে বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস, শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এবং থাইল্যান্ড, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই ইস্যুতে তাদের সহযোগিতা চান।
ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানোর সময় ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ একটি দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি এবং এটি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য।”
দাভোসে আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ড. ইউনূস বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এসময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ড. ইউনূস আসিয়ানের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আসিয়ান একটি প্রধান শক্তি।”
তিনি বাংলাদেশের আসিয়ান সদস্যপদ নিশ্চিত করতে আনোয়ার ইব্রাহিমের সহযোগিতা চান। একই সঙ্গে বাংলাদেশের তরুণ সমাজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ড. ইউনূস দাভোসে তরুণ সমাজের ক্ষমতায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, “তরুণরাই ভবিষ্যৎ সমাজের চালিকাশক্তি। তাদের দক্ষতা বাড়াতে এবং উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগী হতে হবে।” তিনি বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরে বিশ্বনেতাদের কাছে তরুণদের জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
মূল ইভেন্টের পাশাপাশি ড. ইউনূস জাতিসংঘ, বেলজিয়াম, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।