গোপনে ইসরাইলকে অস্ত্র ও তেল সরবরাহ করেছেন এরদোয়ান: ইরানি গণমাধ্যমের দাবি
- By Jamini Roy --
- 23 January, 2025
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গোপনে ইসরাইলকে অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল সরবরাহ করেছেন বলে দাবি করেছে ইরানের গণমাধ্যম পার্স টুডে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ইসরাইলের সঙ্গে এরদোয়ানের গোপন সম্পর্কের তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তুরস্কের পার্লামেন্ট সদস্য জেরগারলিওগলু এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন এবং স্যাটেলাইট চিত্রসহ প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন।
জেরগারলিওগলু জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের বেশ কয়েকটি তেলবাহী জাহাজ মাঝপথে তাদের দিক নির্দেশনার যন্ত্র বন্ধ করে দেয়। এসব জাহাজ ইতালির দিকে যাওয়ার ভান করলেও স্যাটেলাইট চিত্র পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সেগুলো ইসরাইলের হাইফা এবং আশদোদ বন্দরে পৌঁছেছিল। পার্লামেন্ট সদস্যের দাবি অনুযায়ী, এই তেল সরবরাহের তথ্য গোপন রাখার জন্য আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে।
জেরগারলিওগলু আরও বলেন, এরদোয়ান প্রকাশ্যে ইসরাইলের সমালোচনা করলেও বাস্তবে তিনি তাদের সহায়তা করছেন। তার অভিযোগের পক্ষে স্যাটেলাইট চিত্র ও ডাটা প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব ভূমিকা পালন করে আসছেন এরদোয়ান। তিনি প্রকাশ্যে ইসরাইলকে দখলদার ও হত্যাকারী বলে সমালোচনা করেছেন। তুরস্ক একাধিকবার গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে তাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পার্স টুডের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গোপনে তুরস্কই ইসরাইলের অন্যতম বড় তেল সরবরাহকারী দেশ।
পার্স টুডের তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কের পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের একটি গোপন নথি প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে ইসরাইলকে তেল সরবরাহের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এরদোয়ানের এসব গোপন কার্যক্রম নিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তুরস্ক ছিল প্রথম মুসলিম দেশ যারা ১৯৪৯ সালে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন হয়। ২০০৫ সালে এরদোয়ান ইসরাইল সফর করেন এবং থিওডোর হার্জেলের কবর পরিদর্শন করেন। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গাজা ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা গেছে।
এরদোয়ানের গোপন তেল এবং অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পার্স টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরদোয়ানের অবস্থান দ্বিমুখী—একদিকে তিনি ইসরাইলের সমালোচনা করেন, অন্যদিকে গোপনে তাদের সহায়তা করেন। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি তুরস্কের কূটনৈতিক অবস্থানে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।