পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের সহায়তা চাইলেন ড. ইউনূস
- By Jamini Roy --
- 23 January, 2025
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শেখ হাসিনার সরকার আমলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরাতে ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের সহায়তা চেয়েছেন। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ড. ইউনূস বৈঠকে বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের সময় দেশে দুর্নীতির মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। সরকারের ঘনিষ্ঠ ধনকুবেররা ব্যাংক দখল করে ঋণ নিয়ে তা আর পরিশোধ করেনি। এর মাধ্যমে প্রায় ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।
তিনি বলেন, "এটি শুধু আর্থিক দুর্নীতি নয়, বরং এটি দেশের সম্পদ লুণ্ঠনের একটি ভয়াবহ উদাহরণ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে জনগণের সম্পদ লুট করে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিপর্যস্ত করা হয়েছে।"
ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব স্বীকার করেন। তিনি আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) সহায়তায় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেন। লাগার্ড বলেন, "পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হলে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় জরুরি।"
বৈঠকে ড. ইউনূস ও ক্রিস্টিন লাগার্ড বাংলাদেশের আর্থিক সংস্কার, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা করেন। তারা উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে সুশাসন ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা অপরিহার্য।
বৈঠকে ড. ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম। তারা পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ড. ইউনূস জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহযোগিতায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই অর্থ ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে অন্তর্বর্তী সরকার।